প্রবাসী স্বজনশ্রী-ইসমাঈল চক এসোসিয়েশন’ একটি সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন

সামাজিক উন্নয়ন ও মানবিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশে অসংখ্য স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কাজ করে চলেছে। এর মধ্যে সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার চিলাউড়া- হলদিপুর ইউনিয়নের একটি আঞ্চলিক সংগঠন ” প্রবাসী স্বজন শ্রী ইসমাঈল চক এসোসিয়েশন “ একটি উজ্জ্বল নাম। সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষদের পাশে দাঁড়ানো, দুর্যোগে সাহায্যের হাত বাড়ানো, শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়া থেকে শুরু করে পরিবেশ রক্ষায় সচেতনতা গড়ে তোলা—প্রবাসী স্বজন শ্রী ইসমাঈল চক এসোসিয়েশন নিরলসভাবে এসব কাজ করে যাচ্ছে সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে। প্রবাসী স্বজন শ্রী ইসমাঈল চক এসোসিয়েশন’ একটি সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। ৩জন প্রতিষ্ঠাতার সমন্বয়ে ও ৬ জন উদ্যোক্তার হাত ধরে স্বজন শ্রী ইসমাঈল চক গ্রামের মানুষের আর্থ-মানবিক কল্যাণ ও জীবন মানের উন্নয়নের লক্ষ্যে এই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে দিন দিন এর সদস্য সংখ্যা বাড়তে থাকে।  ২০২০-২১ খ্রিস্টাব্দ থেকে ধারাবাহিক কার্যক্রমের মাধ্যমে গ্রামের জীবন-মান উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করে আসছে সুনামধন্য এই সংগঠনটি। সামাজিক, মানবিক ও জীবন মানের উন্নয়ন, শিক্ষা, পরিবেশ ও প্রকৃতি, জলবায়ু পরিবর্তন প্রতিরোধে কাজকরা আঞ্চলিক এই সংগঠনটি গ্রামবাসী সহ এলাকার সমাজকর্মীদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি নাম।

প্রবাসী স্বজন শ্রী ইসমাঈল চক এসোসিয়েশন-এর প্রধান কাজসমূহ

 

১. দরিদ্র ও অসহায় মানুষের সহায়তা

 

প্রবাসী স্বজন শ্রী ইসমাঈল চক এসোসিয়েশন স্বজন শ্রী ইসমাঈল চক গ্রামের দরিদ্র ও অসহায় মানুষদের মাঝে নিয়মিত খাদ্যসামগ্রী, বস্ত্র ও নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী বিতরণ করে থাকে। বিশেষত শীত মৌসুমে শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ, ঈদে নতুন জামাকাপড় দেওয়া, এবং রোজায় ইফতার বিতরণ কর্মসূচি আমাদের নিয়মিত কার্যক্রম।

২. শিক্ষা কার্যক্রম

আমরা স্থানীয় দরিদ্র শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ বিতরণ, শিক্ষাবিষয়ক সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন এবং বিনামূল্যে পাঠদান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছি। অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী প্রবাসী স্বজন শ্রী ইসমাঈল চক এসোসিয়েশন-এর সহায়তায় এখন স্কুল ও কলেজে নিয়মিত পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছেন।

৩. স্বাস্থ্য সচেতনতা ও সেবা

প্রবাসী স্বজন শ্রী ইসমাঈল চক এসোসিয়েশন গ্রামে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা ক্যাম্প, রক্তদান কর্মসূচি এবং বিভিন্ন সময় ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, কোভিড-১৯ এর মতো রোগ সম্পর্কে সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। অনেক সময় আমরা বিনামূল্যে ওষুধও বিতরণ করে থাকি।

৪. পরিবেশ রক্ষা কার্যক্রম

পরিবেশ সচেতনতা গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রবাসী স্বজন শ্রী ইসমাঈল চক এসোসিয়েশন বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি, প্লাস্টিকবিরোধী প্রচারণা এবং পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করে থাকে। স্থানীয় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে  আমরা পরিবেশ বান্ধব মানসিকতা গড়ে তোলায় কাজ করে যাচ্ছি।

৫. নারী ও শিশু উন্নয়ন

নারীর ক্ষমতায়ন ও শিশুর অধিকার বিষয়ে সচেতনতা তৈরিতে প্রবাসী স্বজন শ্রী ইসমাঈল চক এসোসিয়েশন নিয়মিত ওয়ার্কশপ ও সেমিনার আয়োজন করে থাকে। এবং বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ ও নারী নির্যাতন বিরোধী প্রচার-প্রচারণাও চালিয়ে থাকি।

৬. দুর্যোগকালীন ত্রাণ সহায়তা

প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন বন্যা বা ঘূর্ণিঝড়ের সময় প্রবাসী স্বজন শ্রী ইসমাঈল চক এসোসিয়েশন-এর স্বেচ্ছাসেবীরা দুর্গত এলাকায় গিয়ে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করে থাকে,  ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের জন্য সহায়তা করে এবং জরুরি সেবা দিয়ে থাকি।


সমাজে প্রবাসী স্বজন শ্রী ইসমাঈল চক এসোসিয়েশন এর  ভূমিকা

১. সচেতনতা গড়ে তোলা

প্রবাসী স্বজন শ্রী ইসমাঈল চক এসোসিয়েশন স্থানীয় জনগণের মধ্যে নানাবিধ সামাজিক সমস্যা যেমন—মাদক, ইভটিজিং, বাল্যবিবাহ, স্বাস্থ্য ঝুঁকি ইত্যাদি বিষয়ে সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন চালিয়ে আসছে।

২. সরকার ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা

আমরা স্থানীয় প্রশাসন ও কখনও কখনও বিভিন্ন দাতা সংস্থার সহযোগিতায় একসঙ্গে কাজ করে থাকি।

৩. সামাজিক ঐক্য ও মানবিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা

প্রবাসী স্বজন শ্রী ইসমাঈল চক এসোসিয়েশনস কেবল সেবা নয়, বরং সমাজে মানবিকতা, সহানুভূতি, দয়া ও দায়িত্ববোধের বীজ বপন করছে । বিভিন্ন বয়সের স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে আমরা মানবিক নেতৃত্ব তৈরি করেছি।

৪. তরুণ সমাজের নেতৃত্ব গঠন

আমাদের এই সংগঠনের মাধ্যমে অনেক তরুণ সমাজসেবার প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছে। তারা সমাজে নেতৃত্ব, সংগঠনের দক্ষতা ও জনসেবায় সম্পৃক্ত থেকে নিজেদের উন্নয়ন ঘটাচ্ছে।


উপসংহার

স্বজন শ্রী ইসমাঈল চক গ্রামের মাটি ও মানুষের জন্য প্রবাসী স্বজন শ্রী ইসমাঈল চক এসোসিয়েশন একটি আশার নাম। আমরা যেভাবে নিঃস্বার্থভাবে সমাজের জন্য কাজ করে যাচ্ছে, তা নিঃসন্দেহে একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। শুধু সাহায্য নয়,  আমরা সমাজকে সচেতন ও মানবিক করে তুলতে এক অসাধারণ ভূমিকা পালন করছি। সকলের উচিত এমন সংগঠনগুলোর পাশে দাঁড়ানো, তাদের উৎসাহ দেওয়া এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে এমন সেবামূলক কর্মকাণ্ডে উদ্বুদ্ধ করা।